,

‘চিকিৎসা নিতে গিয়ে তছনছ নারীর জীবন’ ব্যবস্থার নির্দেশ মানবাধিকার কমিশনের

সময় ডেস্ক : ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এক নারীর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামালউদ্দিন আহমেদ বৃহস্পতিবার এ নির্দেশ দেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) জাতীয় দৈনিক সমকালের প্রথম পাতায় ‘চিকিৎসা নিতে গিয়ে তছনছ নারীর জীবন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। অভিযোগের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর হওয়ায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান স্বতপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দিয়েছেন বলে সমকালকে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের উপপরিচালক (জনসংযোগ) ফারহানা সাঈদ।
সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ত্রোপচারপরবর্তী সংক্রমণের চিকিৎসা নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যান ২৮ বছর বয়সী এক নারী। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেশ কিছুদিন তাঁর ড্রেসিং (ক্ষতস্থান পরিষ্কার) করেন হাসপাতালের কর্মী রিয়াজ উদ্দিন রবিন। একদিন তিনি বলেন, ‘তোমার কিছু গোপন ছবি আছে আমার ফোনে।’ ছবিগুলো দেখিয়ে তিনি হুমকি দেন, তাঁর সঙ্গে একান্তে সময় না কাটালে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ওই নারী সম্ভাব্য বিপর্যয়ের আশঙ্কায় তাঁকে ‘ভাই’ ডেকে অনেক কাকুতি-মিনতি করেন। তবে শেষ পর্যন্ত ফাঁদে পড়ে সামাজিক বদনামের ভয়ে ওই অনৈতিক প্রস্তাব মেনে নিতে বাধ্য হন তিনি। সেসব মুহূর্তের ছবিও কৌশলে তুলে রাখেন রবিন। এরপর ছবি-ভিডিও ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে বারবার তাঁর ওপর চলে যৌন নিপীড়ন। এক পর্যায়ে তিনি পুলিশের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তখন রবিন বিদেশে চলে যান। তবে পরে তিনি ওই নারীর স্বামীর কাছে ছবিগুলো পাঠিয়ে দেন। এতে চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন ভুক্তভোগী নারী। কিছুদিন পর ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে ছবিগুলো ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে ওই নারীর জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। তিনি ভুয়া আইডি বন্ধ ও ছবি অপসারণের জন্য আদালতে মামলা করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে- রবিন নন, ছবিগুলো ছড়িয়েছেন ভুক্তভোগীর জায়ের (স্বামীর ভাইয়ের স্ত্রী) ভাই। শেষ পর্যন্ত অপরাধী শনাক্ত হলেও ওই নারীর জীবনে ওঠা ঝড় আর থামছে না। লোকজনের নির্দয় কটূক্তির কারণে তিনি এখন ঘর থেকে বের হতে পারেন না। ঘরে মারধর আর গালাগাল তাঁর নিত্যদিনের সঙ্গী। ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘সবাই আমাকে খারাপ মেয়ে বলছে। স্বামী আমার সঙ্গে সংসার করতে চায় না। প্রতিদিন ঝগড়াঝাঁটি হয়, মারধর করে। ওই ছবিগুলা দেখে সে (স্বামী) নিজেও অসুস্থ’ হয়ে পড়ছে। কিন্তু আমার কী অপরাধ? ওরা দুইজন আমার জীবনটা ধ্বংস করে দিল।’


     এই বিভাগের আরো খবর